আজ সোমবার, ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দুই শাহজাহানের দ্বন্দ্বে অপহরণ

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
দুইজনের নামই শাহজাহান। একজন লম্বা, অপরজন খাটো। শহরে একজনকে ডাকা হয় বড় শাহজাহান আরেকজনকে ছোট শাহজাহান নামে। দু’জনের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। তবে শহরে এ দুইজন এখন জুয়ার স¤্রাট। আবার জুয়ার আসরের কর্তৃত্ব নিয়ে দুইজনের মধ্যে চলে দ্বন্দ্ব। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এ দুইজনের দ্বন্দ্বেই অপহরণ হয়েছিলো বড় শাহজাহান।
অভিযোগ রয়েছে, শহরের বিভিন্ন স্থানে জুয়ার স্পট দাতা ছোট শাহজাহান ও বড় শাহজাহান। পুলিশ তাদের বিভিন্ন্ জুয়ার আসরে হানা দিয়ে অন্যদের গ্রেপ্তার করলেও তাদের ধরতে পারেনি। ৫ নম্বর ঘাটের জুয়ার আসরে এসপি হারুন ও র‌্যাব-১১’র অভিযানের পর থেকে জুয়ার আসর বন্ধ ছিলো। তবে এখন নতুন করে আবারো জুয়ার আসর স্থাপনের জন্য পায়তারা করছে ছোট শাহজাহান ও রড় শাহজাহান। কয়েকজন পার্টনার মিলে প্রতি জনে ১ লক্ষ করে টাকা নিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা করে তারা। এদিকে ছোট শাহজাহান চায় ভিন্ন কিছু। এবার তিনি একাই জুয়ার আসর পরিচালনা করবে। তবে শহরের বিভিন্ন মানুষের সাথে বড় শাহজানের ভালো সর্ম্পক আছে বলে তাকে ছাড়া জুয়ার আসর বসানো সম্ভব না। নতুন জুয়ার আসর ও লাখ টাকা করে পুঁজি নিয়ে পার্টনার হওয়ার খবর পৌছে যায় শহরের চাষাঢ়া এলাকায় একটি টর্চার সেল চালানো প্রভাবশালী রাজনীতিকের পুত্রের অনুসারীদের কাছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধায় শহরের ৫ নম্বর ঘাট থেকে বড় শাহজাহানকে তুলে নিয়ে যায় তারা। চাষাঢ়ার ওই টর্চার সেলে আটকে মারধর করা হয়।
অপহরনকরীরা প্রথমে তার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপন চায়। উত্তরে বড় শাহজাহান বলে, আমার কাছে এত টাকা নাই। পরে অপহরনকারীরা বলেন তোর কাছে যেই ২ লক্ষ টাকা আছে তা কই। শাহজাহান বলে আমার কাছে ২ লক্ষ টাকা নাই ১ লক্ষ টাকা আছে। এই টাকা দিয়ে যাওয়ার জন্য ছোট শাহজাহানকে ফোন করা হয়। ফোনে ছোট শাহজাহান বলেন, তার কাছে ১ লক্ষ টাকা পুরো নাই। কিছু টাকা কাজে খরচ করেছে। তবে টাকার লেনদেনের আগেই পরিবারের সদস্যরা র‌্যাব ও পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে চাষাঢ়ায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় বড় শাহজাহানকে।
সূত্র মতে, বড় শাহজাহানের কাছে টাকা আছে এমন খবর জানতো ছোট শাহজাহান। জুয়ার আসরের কতৃত্ব নিতে ছোট শাহজাহানই অপহরণের পেছনে কল কাঠি নেড়েছিলো বলে জানায় সূত্রটি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছোট শাহজাহান। তার দাবি, এসব সমন্ধে কিছুই জানেন না তিনি।
সূত্র জানায়, অপহরনকারীদের সাথে দুই শাহজাহানেরই ভালো সর্ম্পক ছিলো। তবে ছোট শাহজাহানের একটু কাছের মানুষ ছিলো পাইকপাড়া এলাকার সুমন।
সুমনের কথায় বড় শাহজাহানকে তুলে নিয়ে যায় অপহরনকারীরা। উদ্ধারের পর এ বিষয়ে থানায় সাংবাদিক ও ওসির সামনে এসব বিষয়ে কথা বললেও রহস্যজনক কারনে মামলায় এসব বিষয় গোপন করেছে বড় শাহজাহান। এমনকি তার কোমরে গুজে দেয়া অস্ত্রের কথাও মামলায় উল্লেখ হয়নি।
এ বিষয়ে বড় শাহজাহান জানান, আমি শিউর না। তবে সে (ছোট শাহজাহান) চক্রান্ত করতেও পারে। তবে আমি কারও ক্ষতি করি না। ছোট শাহজাহানকে আমি নিজের ভাইয়ের মতো মনে করি। এখন সে যদি ক্ষতি করে আমার কিছু বলার নাই। তিনি দাবি করেন, ১৩ মাস আগে শেষ জুয়ার আসর চালিয়েছেন। এখন আর জুয়ার সাথে সম্পৃক্ত নন।